Advertisement

ছদ্মবোড়া বা পাহাড়ি সাপ (Common Mockviper)

Asian Common mockviper আসলে কোনো ভাইপার প্রজাতির সাপ নয়, ভাইপারদের মতো এদের এতো লম্বা দাঁত (Solenoglyph) কিংবা বিষও থাকেনা, তার পরিবর্তে এদের মুখের পিছনের দিকে দুটি বিষদাঁত থাকে (Opistoglyph) যার জন্য এরা মৃদু-বিষধর স্বভাবের। আসলে এরা ভাইপারদের মতো ভাব প্রদর্শন করে, প্রাণিজগতে যেটি Batesian mimicry নামে পরিচিত, তাই এদের বাংলা নাম করা হয়েছে " ছদ্মবোড়া " বা " পাহাড়ি সাপ "।

১৮২৭ সালের দিকে প্রথমে এটিকে Psammophis pulverulentus হিসেবে নামকরণ করা হয় এবং Dendrelaphis পরিবারের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পরবর্তীতে একে Psammodynastes গণ নাম দিয়ে Lamprophiidae পরিবারে তালিকাভূক্ত করা হয় [1]।



ছবি : ছদ্মবোড়া ( The Reptile Database থেকে সংগৃহীত) 

সর্বশেষ ২০২৪ সালে Psammodynastes গণের দুটি সাপকে এদের ফাইলোজেনেটিক রিলেশনশিপের ভিত্তিতে নতুন একটি ফ্যামেলি Psammodynastidae হিসেবে নামকরণ করা হয়। [2]

এই গণের অন্তর্ভুক্ত দ্বিতীয় প্রজাতিটি হলো Psammodynastes pictus, যেটি অধিক জলাময় পরিবেশে থাকে এবং পশ্চিম মালয়েশিয়া, সুমাত্রা দ্বীপপুঞ্জ, বোর্নিও, সিঙ্গাপুর প্রভৃতি দেশে সীমাবদ্ধ। [3]

এরা দৈর্ঘ্যে সাধারণত ৩৪০-৫৪০ মিলিমিটার লম্বা হয়ে থাকে, তবে সর্বোচ্চ ৭৭০ মিলিমিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। [1]

P. Pulverulentus ফরেস্ট ফ্লোর, নিচু গাছপালা, নিচু ভূমি এবং গাছপালা সমৃদ্ধ ঝোপঝাড়ে থাকতে পছন্দ করে। দিনে সক্রিয় থাকে এবং রাতে নিচু গাছপালার পাতা ও ছোট ডালপালা, গাছের গর্ত প্রভৃতি জায়গায় অবস্থান নেয়।

এরা প্রাইমারি, সেকেন্ডারী কিংবা খন্ডিত, সবধরনের বনে বাস করতে পারে। মেজাজে উগ্র (Aggressive) এবং বিরক্ত করলে কামড় বসিয়ে দেয়। যদিও মৃদু-বিষধর হওয়ায় মানুষের তেমন ক্ষতি করতে পারেনা।

দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো এদের বিচরণস্থল, নেপাল, উত্তর-পূর্ব ভারত ( মিজোরাম, আসাম, মেঘালয়, উড়িষ্যা, অরুণাচল প্রদেশ, ত্রিপুরা, নাগাল্যান্ড প্রভৃতি), মায়ানমার, তাইওয়ান, চীনের দক্ষিণাঞ্চল, মালয়েশিয়া, ভূটান প্রভৃতি দেশে পাওয়া যায়। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসে স্ত্রী সাপ সরাসরি ৩-১০টি বাচ্চা প্রসব করে (Viviparous)। IUCN এটিকে Least Concern হিসেবে তালিকাভূক্ত করেছে।[4]

বাংলাদেশের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে চালানো এক গবেষণায় দেখা যায় যে এরা অক্টোবর মাসে সবথেকে বেশি সক্রিয় থাকে যেটি জুলাই থেকে শুরু হয়। এই গবেষণায় লাউয়াছড়ার ভেতরের রাস্তায় ৫৭টি ছদ্মবোড়া সাপের মৃতদেহ পাওয়া যায়। [5]

References 

  1. A. H Miller and G. R. Zug. 2016. Morphology and biology of the Asian Common Mockviper, Psammodynastes pulverulentus (Boie, 1827) (Serpents : Lamprophiidae : a focus on Burmeses populations. Proceedings Of The Biological Society of Washingto. 129: 173-194
  2. S. Das, E. Greenbaum, J. Brecko, O. S. G. Pauweles, S. Ruane, S. Pirro and J. Merila.2024. Phylogenomics of Psammodynastes and Buhoma (Elapoid : Serpents), with the description of a new Asian Snake family. Nature / Scientific Reports.14:9489
  3. S. Asad, A. Wilting, J. Siku and M. Rodel.2020.Possible spatial separation at macro-habitat scales between two congeneric Psammodynastes species, including observations of fishing behaviour in Psammodynastes pictus.Salamandra.56(4): 411-415
  4. IUCN, Psammodynastes pulverulentus 
  5. S. C. Rahman, S. M. A. Rashid, K. Das, C. Jenkins and L. Luiselli.2013. Monsoon does matter: annual activity patterns in a snake assemblage from Bangladesh. The British Herpetological Society. 23: 203-208

Post a Comment

0 Comments