Advertisement

বাগান গিরগিটি বা রক্তচোষা (Oriental Garden Lizard)

 বাগান গিরগিটি (Oriental garden lizard) বাংলাদেশে বসবাসকারী এক প্রকার লিজার্ড জাতীয় সরীসৃপ। এটিকে ইংরেজিতে Eastern garden lizard, Common garden lizard বা Changeable lizard ইত্যাদি নামে ডাকা হয়, তবে এটিকে সবাই রক্তচোষা (Bloodsucker) নামেই চিনে। অঞ্চলভেদে এরা আবার বিভিন্ন নামে পরিচিত, যেমন : কক্কা, খাখলাস, কাকলাস, রক্তখাউরী, চ্যাপা গিরগিটি ইত্যাদি । এগামিডি পরিবারভূক্ত এই প্রাণীর বৈজ্ঞানিক নাম Calotes versicolor


এদের দেহ থেকে লেজের দৈর্ঘ্যই বেশি, লেজসহ একটি গিরগিটি প্রায় ৩৭ সেন্টিমিটার লম্বা হতে পারে। দেহের ওপরের অংশের রঙ লাইট হলদে-সোনালি, বাদামি, জলপাই-ধূসর হয়। পিঠের উপরে ও পাশের দিকে কতগুলো কালচে ফোঁটা ফোঁটা দাগ থাকে। দেহের নিচের অংশ ময়লা-সাদা রঙের এবং পীঠের দিকে কাঁটা রয়েছে। ভয় পেলে, প্রজনন মৌসুমে কিংবা শিকারীর থেকে আত্মরক্ষার জন্য এরা পরিবেশের সাথে নিজেদের দেহের রঙের পরিবর্তন করতে পারে, এটা তাদের অভিযোজন (Adaptation)। তবে গলার নিচের অংশ লাল বর্ণ ধারণ করে বলে এরা মানুষের রক্ত পান করে বলে কুসংস্কার আছে। এই কুসংস্কার থেকেই এদেরকে রক্তচোষা নাম দেয়া হয়েছে, যারফলে এদেরকে প্রায়ই মানুষের হাতে মরতে হয়। পাশাপাশি এদেরকে বিষধর প্রাণী হিসেবেও গণ্য করা হয়, কিন্তু বাস্তবতা হলো এরা নির্বিষ।

বাগান গিরগিটি অনান্য লিজার্ডদের মতো নিজেদের লেজকে ফেলে দিতে পারেনা (Tail autotomy) এবং এটাকে জন্মাতেও পারেনা।

বাংলাদেশ ছাড়াও এটিকে ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভূটান, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম প্রভৃতি দেশে পাওয়া যায়। বন-জঙ্গল, ঝোপঝাড়, রাস্তার পাশ জন্মানো গুল্ম, নিচু ডালপালা, পত্রঝড়া বন, ট্রপিক্যাল রেইন ফরেস্ট প্রভৃতি স্থানে দেখা যায়। এদের খাদ্য তালিকায় রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির কীটপতঙ্গ (এরা Insectivorous), যেমনঃ ঘাসফড়িং, ঝিঁঝিপোকা, ঘর টিকটিকি, পিঁপড়া ইত্যাদি। 

রক্তচোষা গাছের গর্তে অথবা মাটিতে গর্ত করে ডিম পারে (Oviparous), ডিমগুলো নরম এবং লম্বাকৃতির, সংখ্যায় সাধারণত ১০-১৫টি। এক বছর বয়স থেকেই এরা প্রজনন উপযোগী হয়ে যায়। 

Post a Comment

0 Comments