Advertisement

ছোট কৃষ্ণ কালাচ বা ছোট কালকেউটে (Lesser Black Krait)

ছোট কাল কেউটে (Lesser Black Krait) হলো এলাপিডি পরিবারভূক্ত এবং নিউরোটক্সিন বিষ সমৃদ্ধ একটি তীব্র বিষধর প্রজাতির সাপ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Bungarus lividus। এটি ভারতীয় উপমহাদেশে এন্ডেমিক তাই শুধুমাত্র বাংলাদেশ (রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর প্রভৃতি অঞ্চলে), ভারত ও নেপালে পাওয়া যায় ( ভূটানেও এটি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে)। 

বাংলাদেশের বৃহত্তর সিলেটে ও চট্টগ্রামে এর কোনো রেকর্ড এখনো পাওয়া যায়নি, তবে এদেরকে দেশের উত্তরাঞ্চলে ভালো পরিমানেই পাওয়া যায়। 

এটি ছোট আকৃতির ক্রেইট জাতীয় সাপ যা প্রায় ৭০-১০২ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। এদের দেহ সরু। দেহের বর্ণ কালো বা নীলাভ-কালো হয়ে থাকে। উপরের অংশটা অর্থাৎ পিঠের বর্ণ কালো হলেও পেটের বর্ণ সাদা বা হলদে-সাদা। চোখ ছোট আকৃতির এবং কালো রঙের। মেরুদণ্ড বরাবর যে ষড়ভুজাকৃতির (Hexagonal) আশের সারি থাকে, সেটা অনেকটাই অস্পষ্ট থাকে যা ভারতীয় উপমহাদেশের অনান্য কোনো ক্রেইটদের (Common Krait, Banded Krait, Greater Black Krait etc.) সাথে মিলসম্পন্ন নয়।



ছবি : ছোট কৃষ্ণ কালাচ (Adapted From iNaturalist UK)

ছোট কৃষ্ণ কালাচ প্রধানত পানির কাছাকাছি খোলা মাঠ, চিরসবুজ বা আধা-চিরসবুজ জঙ্গলে, ধানের জমি,  পাথরের স্তুপের নিচ ইত্যাদি জায়গায় বিচরণ করে। অন্যান্য ক্রেইটদের মতো এরাও নিশাচর (Nocturnal) তাই রাতেই বেশি সক্রিয় থাকে। তবে আলোর প্রতি সংবেদনশীল হওয়ায় আলোকোজ্জ্বল জায়গা এড়িয়ে চলে, এমনকি পূর্ণিমা রজনীর আলোর প্রতিও এরা সংবেদনশীলতা প্রদর্শন করে।

এরা প্রধানত ওভিপোরাস, তাই স্ত্রী সাপ প্রজনন মৌসুমে ডিম পাড়ে ও ডিম ফোটা পর্যন্ত ডিম পাহারা দেয়। খাদ্য তালিকায় রয়েছে নিজেদের চেয়ে আকারে ছোট অন্যান্য প্রজাতির সাপ, এমনকি নিজ প্রজাতির ছোট সাপ। পাশাপাশি,  ইঁদুর, ছোট পাখি, গিরগিটি ইত্যাদি খেয়ে থাকে ।

এরা বিষধর সাপ এবং এদের কামড়ে মৃত্যুর রেকর্ড আছে, তাই এদের কামড়ের ব্যাপারে যথেষ্ট সতর্ক থাকতে হবে। একটি প্রকাশিত গবেষণা আর্টিকেল অনুযায়ী Lesser Black Krait এর বিষক্রিয়ার লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে - পেট ব্যাথা (Abdominal Pain), বমি (Vomiting), বাচনভঙ্গি হারিয়ে ফেলা বা ঝাপ্সা ঝাপ্সা কথা বলা (Slurred Speech),  নিউরোমাসকুলার প্যারালাইসিস ইত্যাদি। 

Lesser Black Krait সম্পর্কে খুবই কম গবেষণা হয়েছে, তাই এর সম্পর্কে এখনো এতোটা বিস্তারিতভাবে জানা সম্ভব হয়নি। তাই নব্য গবেষকদের এই সাপটি নিয়ে গবেষনা করা উচিত। 

Post a Comment

0 Comments