Advertisement

বাংলাদেশের সবচেয়ে বিষধর ১০টি সাপ (Top 10 Venomous Snakes in Bangladesh)

 বাংলাদেশে প্রায় ৯৫-১০০+ প্রজাতির সাপের বসবাস। কলুব্রীডি, এলাপিডি, ভাইপারিডি, পাইথনিডি, টেফলোপিডি প্রভৃতি গোত্রের সাপ এই উর্বর কৃষির দেশে পাওয়া যায়। এদের মধ্যে বেশিরভাগই নির্বিষ সাপ। বিষধর যেগুলো আছে তাদের সবাই এলাপিডি আর ভাইপারিডি পরিবারভূক্ত, কলুব্রীডি পরিবারেরও ২-৩ প্রজাতি বিষধর। বাংলাদেশের সবচেয়ে মারাত্মক বিষধর প্রজাতিগুলো মূলত সামুদ্রিক সাপ, যেগুলো মানুষের সংস্পর্শে আসার ঘঠনা বিরল। তবে বাংলাদেশে সাপের কামড়ে মৃত্যুর জন্য দায়ী মূলত এই এলাপিডি আর ভাইপারিডি গোত্রের সাপগুলো। Subcutaneous Median Lethal Dose 50 (SC LD50) (বিষয়টাকে পরিস্কারভাবে বুঝতে ক্লিক করুন) এর উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের সবচেয়ে বিষধর দশটি প্রজাতির সাপের তালিকা দেয়া হলো- 


1. হলদে-পেট সামুদ্রিক সাপ বা রঙ্গিলা সামুদ্রিক সাপ : এর ইংরেজি নাম Yellow-bellied Sea Snake এবং বৈজ্ঞানিক নাম Hydrophis platurus. এটি এলাপিডি পরিবারভূক্ত একটি সামুদ্রিক সাপ। এটির বিষের SCLD50 এর মান 0.067 মিলিগ্রাম /কেজি। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বিষধর সাপ। এটির বিষ নিউরোটক্সিন এবং দুই ধরনের আইসোটক্সিন ধারণ করে। এটি পৃথিবীর ৪র্থ তম বিষধর সাপ।


2. বড়শি-নাক সামুদ্রিক সাপ বা জাল কেরানি সাপ : এর ইংরেজি নাম Hook-nosed Sea Snake এবং বৈজ্ঞানিক নাম Hydrophis schistosus। এটিও এলাপিডি পরিবারভূক্ত একটি সামুদ্রিক সাপ। এটির বিষের SCLD50 এর মান 0.1125 মিলিগ্রাম /কেজি। এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বিষধর সাপ। এটির বিষ নিউরোটক্সিন এবং মায়োটক্সিন ধারণ করে। এটি পৃথিবীর ১০ম বিষধর সাপ।


3. পদ্ম গোখরা বা কেউটে : এর ইংরেজি নাম Monocled Cobra এবং বৈজ্ঞানিক নাম Naja kaouthia। এটি এলাপিডি পরিবারভূ্ক্ত। এটির বিষের SCLD50 এর মান দেশভেদে ভিন্ন হয়। যেমন : 0.18-0.22 মিলিগ্রাম /কেজি (থাইল্যান্ড), 0.90-1.11 মিলিগ্রাম /কেজি (মালয়েশিয়া) এবং 0.90-1.00 মিলিগ্রাম /কেজি (ভিয়েতনাম) ।এই মনোকল্ড কোবরাই বাংলাদেশের স্থলে বসবাসকারী সবচেয়ে বিষধর সাপ। এটির বিষ নিউরোটক্সিন, মায়োটক্সিন এবং কার্ডিওটক্সিন ধারণ করে। এটি পৃথিবীর ১৪তম বিষধর সাপ।


4. খৈয়া গোখরা : এর ইংরেজি নাম Spectacled Cobra এবং বৈজ্ঞানিক নাম Naja naja। এটিও এলাপিডি পরিবারভূক্ত সাপ। এটির বিষের SCLD50 এর মান প্রায় 0.56 মিলিগ্রাম /কেজি। এটির বিষ নিউরোটক্সিন এবং কার্ডিওটক্সিন ধারণ করে। এটি পৃথিবীর ১৯তম বিষধর সাপ।



ছবি : Indian Cobra ( Source : Wikipedia) 


5. কালাচ বা পাতি কালকেউটে : এর ইংরেজি নাম Common Krait আর বৈজ্ঞানিক নাম Bungarus caeruleus। এটি এলাপিডি পরিবারভূক্ত সাপ। এটির বিষের SCLD50 এর মান 0.325 মিলিগ্রাম /কেজি। এটি নিউরোটক্সিন বিষ ধারণ করে। এটি পৃথিবীর ২৪তম বিষধর সাপ।


6. পাতাল নাগিনী : এর ইংরেজি নাম Annulated Sea snake এবং বৈজ্ঞানিক নাম Hydrophis cyanocinctus। এটিও এলাপিডি পরিবারভূক্ত। এটির বিষের SCLD50 এর মান 0.39-0.41 মিলিগ্রাম /কেজি। এটি থ্রি-ফিঙ্গার টক্সিন বিষ ধারণ করে। এটি পৃথিবীর ২৫তম বিষধর সাপ।


7. চন্দ্রবোড়া : এটির ইংরেজি নাম Russell’s Viper এবং বৈজ্ঞানিক নাম Daboia russelii। এটি ভাইপারিডি পরিবারভূক্ত সাপ। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে ভয়ংকর আগ্রাসী সাপ। এটির বিষের SCLD50 এর মান 0.75 মিলিগ্রাম /কেজি। এটি হেমোটক্সিন বিষধারী এবং পৃথিবীর ৩৩তম বিষধর সাপ।


8. শঙ্খচূড় বা রাজগোখরা : এটির ইংরেজি নাম King Cobra এবং বৈজ্ঞানিক নাম Ophiophagus hannah। এটি এলাপিডি পরিবারভূক্ত সাপ। এটির বিষের SCLD50 এর মান 1.5-1.7 মিলিগ্রাম /কেজি। কিং কোবরা আকৃতিতে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বিষধর সাপ। এটি নিউরোটক্সিন এবং কার্ডিওটক্সিন বিষ ধারণ করে। এটি পৃথিবীর ৩৯তম বিষধর সাপ।


9. শঙ্খিনী বা শাখাঁমুঠি : এটির ইংরেজি নাম Banded Krait এবং বৈজ্ঞানিক নাম Bungarus fasciatus। এটিও এলাপিডি পরিবারভূক্ত। এটির বিষের SCLD50 এর মান 2.4 মিলিগ্রাম /কেজি। এটি নিউরোটক্সিন বিষধর।


10. লাল-ঘাড় ঢোঁড়া সাপ বা হাল্লাবো সাপ : এটির ইংরেজি নাম Red-nacked Keelback এবং বৈজ্ঞানিক নাম Rhabdophis subminiatus। এটি কলুব্রীডি পরিবারভূক্ত সাপ। এটির বিষে বিভিন্ন প্রকার রাসায়নিক যৌগের জন্য (হেমোরেজিন, প্রোকোয়াগুলেন্ট ইত্যাদি) মানবদেহে বিষক্রিয়া দেখা দেয়। এটি বাংলাদেশের একমাত্র বিষাক্ত ও বিষধর সাপ। 




Post a Comment

0 Comments